আওয়ামী লীগের গঠন সম্পর্কে লিখ।
ভূমিকা : রাজনৈতিক দল হচ্ছে এমন একটি জনসমষ্টি যারা রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানের পন্থা জনসম্মুখে প্রচারের মাধ্যমে জনসমর্থন লাভ করে এবং ক্ষমতা দখল ও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার গঠন করে। বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের রাজনৈতিক দল রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও পুরাতন রাজনৈতিক সংগঠন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকায় রোজ গার্ডেনে পূর্ব বাংলা মুসলিম লীগের কতিপয় প্রগতিশীল নেতা ও কর্মী এক সম্মেলনে মিলিত হয়ে পূর্ব বাংলা আওয়ামী মুসলিম লীগ' নামে একটি নতুন দল গঠন করেন। এ নবগঠিত দলের সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শামসুল হক এবং যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও শেখ মুজিবুর রহমান। পশ্চিম পাকিস্তানেও এর শাখা সংগঠিত হয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের আহবায়ক নিযুক্ত হন। প্রতিষ্ঠা লগ্নেই পূর্ব বাংলা আওয়ামী মুসলিম লীগ ৪২ দফা দাবি পেশ করেন। এ দাবিগুলোর মধ্যে মূলদাবি ছিল লাহোর প্রস্তাব ভিত্তিক পূর্ববাংলার আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন, বাংলাভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষাকরণ, জমিদারি প্রথা রহিতকরণ ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বৃত্ত জমি কৃষকদের মধ্যে বণ্টন, পাট ও চা শিল্প এবং ব্যবসায় জাতীয়করণ, সমবায়ভিত্তিক কৃষিব্যবস্থা প্রবর্তন। শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান, গণমুখী, বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা চালুকরণ প্রভৃতি। ১৯৫৫ সালে ২২ অক্টোবর আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলটির নাম থেকে 'মুসলিম' শব্দটি বর্জন করে একে একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে দলটি আওয়ামী লীগ নামেই পরিচিত হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে আমরা জানতে পারি যে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ ও পুরাতন, রাজনৈতিক সংগঠন। নানা চড়াই উৎরাই এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বাংলাদেশ সৃষ্টির পিছনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।