ফ্লোর ক্রসিং বলতে কি বুঝায়? ফ্লোর ক্রসিং কি? ফ্লোর ক্রসিং কাকে বলে?

ভূমিকা : বাংলাদেশের সংবিধানের ধারাসমূহের মধ্যে একটি ধারা হলো "ফ্লোর ক্রসিং"। এর বিপরীত আইন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচিত রাজনৈতিক দলের সমর্থন ও সফলতাকে অব্যাহত রাখার জন্য সংবিধানের ৭০ নং ধারায় এই বিশেষ পদ্ধতি তৈরি করা হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে দলত্যাগকে সীমাবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।

ফ্লোর ক্রসিং কি?

"ফ্লোর ক্রসিং" হলো বিপক্ষে ভোট দান করা বা দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদস্বরূপ আইনসভায় উপস্থিতি না থাকা। সুতরাং আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ফ্লোর ক্রসিং সরকারি দলের ক্ষেত্রে একটি বিরাট বাধাস্বরূপ। তাই কোনো কোনো রাষ্ট্রে ফ্লোর ক্রসিং নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে ফ্লোর ক্রসিং কথাটির উল্লেখ নেই। তবে এর বিপরীত একটি আইনের উল্লেখ আছে।

ফ্লোর ক্রসিং সংবিধানের কত নং অনুচ্ছেদে আছে

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অভিনবত্ব দান করেছে। এই অনুচ্ছেদে ফ্লোর ক্রসিং নিষিদ্ধ করে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার্থে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালে সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে পরবর্তীতে তিনি যদি উক্ত দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন তবে সংসদে তার আসন শূন্য হবে। তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তীতে কোনো নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

১৯৯১ সালের সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীতে সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ বহাল রেখে তার সাথে আরো একটি বিষয় যোগ করা হয় বলা হয় যে, যদি কোনো সদস্য উপদল গঠন করেন তবে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারাবেন।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ফ্লোর ক্রসিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই এ বিষয়ের পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি রয়েছে। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই তার মাধ্যমে ব্যক্তির মৌলিক অধিকার, ব্যক্তিস্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা ইত্যাদিকে হরণ করা হয়। তবে এটি বর্তমানে একটি গ্রহণযোগ্য বিষয়। কারণ সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য দলের জনসমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
পূর্ববর্তী পরবর্তী
No Comment
মন্তব্য করুন
comment url