চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি? স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি?
চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বা স্বার্থ গোষ্ঠী হল এমন এক জনসমষ্টি যারা সমজাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ার উপরে প্রভাব বিস্তার করে। ক্ষমতা দখল করা চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য নয় বরং নীতি নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করাই স্বার্থ গোষ্ঠী উদ্দেশ্য। সরকারি নীতি নির্ধারণে চাপ প্রয়োগ করে গোষ্ঠীগত স্বার্থ রক্ষা করাই চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর প্রধান উদ্দেশ্য।
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের স্বার্থগত ব্যাপারে/ইস্যুগুলোতে একই রকম মনোভাব পোষণ করে। এই স্বার্থ গোষ্ঠী নানাবিধ চাপ প্রয়োগ ও কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের দাবি-দাওয়া আদায় করে। চলুন জেনে নেই, স্বার্থবাদী গোষ্ঠী বা চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যসমুহ
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্যসমুহ
১। দলীয় সংগঠনবিহীন : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এদের কোন দলীয় সংগঠন নেই। এদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ক্ষমতা গ্রহণ নয়। সরকারের উপরে চাপ প্রয়োগ করে নিজেদের স্বার্থ বা দাবি আদায় করা হচ্ছে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর লক্ষ্য।
২। দলীয় কর্মসূচিবিহীন: চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কোন রাজনৈতিক দল নয় বিধায় এদের কোন দলীয় কর্মসূচিও নেই। এটি নির্দলীয় সংগঠন। এরা শুধু গোষ্ঠীর স্বার্থ পূরণের জন্য চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে।
Also Read: চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সংজ্ঞা দাও।
৩। নির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়া : চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী নির্বাচনে প্রার্থী দেয় না এবং নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি প্রচারণা চালায় না। তবে অনেক সময় তাদের পছন্দের প্রার্থীকে অর্থ কিংবা জনবল দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে। এছাড়াও কোন কোন দেশে চাপসৃষ্টিকারী কোন কোন গোষ্ঠীকে পছন্দের দলের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিতে দেখা যায়।
৪। সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করা: চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সদস্যরা গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে সরকারের কোন পদে অধিষ্ঠিত হতে চায় না। বরং নানাভাবে সরকারি নীতিকে নিজেদের অনুকূলে আনার জন্য প্রচেষ্টা চালায়।
৫। সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নয়: চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকে না। তবে পরোক্ষভাবে রাজনীতিক নেতৃবৃন্দের সাথে তাদের যোগাযোগ থাকতে পারে। আর এ যোগাযোগের ভিত্তিতে স্বার্থ গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তার করে।
৬। সমজাতীয় মনোভাব : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সদস্যরা সাধারণত সমজাতীয় মনোভাব সম্পন্ন হয়ে থাকে। আর এ সমজাতীয় মনোভাবের মূলে রয়েছে তাদের স্বার্থ। কেননা সমজাতীয় মনোভাব সম্পন্ন না হলে তাদের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়।
৭। বেসরকারি সংগঠন : চাপসৃষ্টিকারী দলের সদস্যগণ বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের সমষ্টি বিশেষ। চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর আনুষ্ঠানিক সরকারি স্বীকৃতিও সাধারণত থাকে না।
পরিশেষে বলা যায়, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা সরাসরি না থাকলেও, মূলত রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ততার মাধ্যমেই তারা দাবি বা স্বার্থ হাসিল করে থাকে। এভাবে দেখলে রাজনৈতিক দল না হলেও, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো পরোক্ষভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে।