পূর্বমুখী নীতি কি? বাংলাদেশের পূর্বমুখী নীতির প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।

ভূমিকা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বিমেরুকরণ প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এ মেরুকরণের বিশ্বব্যবস্থার এক দিকে অবস্থান নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং অপরদিকে অবস্থান নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ সমগ্র বিশ্ব পূর্ব ও পশ্চিম নীতি অনুসারে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ সময় বাংলাদেশ পাকিস্তান শাসন বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে লিপ্ত হয়। পাকিস্তনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তান পশ্চিমা নীতি অবলম্বন করে। সংগত কারণেই বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ পূর্বমুখী নীতি অনুসরণ করতে থাকে।


বাংলাদেশের পূর্বমুখী নীতির প্রয়োজনীয়তা : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক দেশ রাশিয়া বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করে। এর ফলে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ পূর্বমুখী নীতি গ্রহণ করে এবং সংবিধানেও এর প্রতিফলন ঘটানো হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার যে চারটি মূল নীতির কথা উল্লেখ করা হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি মূলনীতি হলো সমাজতন্ত্র। এখানে সমাজতন্ত্র মূলনীতিটি সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থে ব্যবহর করা হয়েছে।

যদিও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। অর্থাৎ পশ্চিমা নীতি হলো বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার স্তম্ভ। তারপরও এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশ পূর্বমুখী বর্জিত। মূলত বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি রচিত হয়েছিল পূর্বমুখী নীতি অনুসারে। তাই বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে পূর্বমুখী নীতি পরিলক্ষিত। বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার পূর্ব নীতি অনুসরণ করা হয় বলে বাংলাদেশে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের পূর্বমুখী নীতি বলতে সেই নীতিকে বুঝায় যা সোভিয়েত ইউনিয়ন তথ্য রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক নীতির কিছুটা সমকক্ষ বা অনুসারি। বাংলাদেশের শাসনতান্ত্রিক দলিল সাংবিধানেও পূর্বমুখী নীতির স্পষ্ট ছাপ দেখা যায়।
পূর্ববর্তী পরবর্তী
No Comment
মন্তব্য করুন
comment url