সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী? সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কাকে বলে? সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর।
ভূমিকা : স্নায়ুযুদ্ধের পরবর্তী সময় অর্থাৎ বর্তমানকালে যে নিরাপত্তার ধারণা বিদ্যমান তা হলো সমকালীন নিরাপত্তা। প্রচলিত নিরাপত্তার গণ্ডি থেকে বেরিয়ে সামগ্রিক মানব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে মানুষের জীবনকে পূর্ণাঙ্গভাবে নিরাপত্তার যে প্রক্রিয়া তাই সমকালীন নিরাপত্তা। নিচে সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা: সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানুষের সামগ্রিক জীবনযাপনের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া অবলম্বন করে। নিচে এ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. মানব নিরাপত্তার প্রতি গুরুত্ব প্রদান : সমকালীন নিরাপত্তায় মানুষের সর্বাধিক নিরাপত্তার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। মানবজাতিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখাই এর প্রধান কাজ। বসবাস, চলাফেরা ও যাতায়াতের নিরাপত্তা এতে বিবেচনা করা হয়।
২. মানব স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে গুরুত্ব : মানুষের নিরাপত্তার জন্য মানুষের ভালো স্বাস্থ্য প্রয়োজন। সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এ বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিরাপদ মাত্রা, পুষ্টি, খাদ্য সরবরাহ, ওষুধ ইত্যাদির মাধ্যমে মানব স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
৩. দারিদ্র্য দূরীকরণের গুরুত্ব : দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়টিকে সমকালীন নিরাপত্তায় গুরুত্ব প্রদান করা হয় কারণ। দারিদ্র্য থাকলে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া অনাহারে মানুষ মারা যেতে পারে। এজন্য দরিদ্রতা দূরীকরণের জন্য সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কাজ করে চলেছে।
৪. পরিবেশ রক্ষায় যত্নবান : পরিবেশ দূষণের ফলে মানব স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। এজন্য গবেষকরা সর্বদা চেষ্টা করছে কীভাবে পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে সমকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
৫. টেকসই উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব : টেকসই উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব রোম ২০১৫-২০৩০ সাল পর্যন্ত সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) নির্ধারণ করা হয়েছে। কীভাবে পরিবেশ ধ্বংস না করে উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে গবেষণা চলছে। সমকালীন নিরাপত্তায় এর গুরুত্ব সর্বাধিক।
৬. সামষ্টিক নিরাপত্তা : সামষ্টিক নিরাপত্তার ধারণা একটি সার্বিক প্রক্রিয়া। এখানে বিশ্বের সমগ্র মানব জাতির নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া যায়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, দেশ সম্পর্কে সামষ্টিক নিরাপত্তা ধারণায় কোন পার্থক্য করে না। যখন, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সেবা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করা হয়, তখন তা সমগ্র মানব জাতির প্রতি বিবেচনা করা হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, সমকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন একটি প্রক্রিয়া যা সমগ্র মানবজাতির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজ করে। মানুষের স্বাস্থ্য, দরিদ্রতা, ক্ষুধা, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে এ প্রক্রিয়া আলোচনা করে। অর্থাৎ মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটি কাজ করে যায়।
