রাজনৈতিক ক্ষমতা কাকে বলে।
ক্ষমতা কি | ক্ষমতা কাকে বলে | রাজনৈতিক ক্ষমতা কি
সাধারণ অর্থে ক্ষমতা হল শক্তি বা প্রভাব। এটা এমন এক দক্ষতা যার সাহায্যে একজন মানুষ অন্য মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এ শক্তি বা দক্ষতার সাহায্যে রাষ্ট্র ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে কাজে বাধ্য করতে পারে।
আলফ্রেড ডি গ্রেজিয়া ক্ষমতার সুন্দর সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তাঁর মতে, “ ক্ষমতা হল মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের সামর্থ"। Power is the abilty to make decisions influencing the behaviour of persons.
রবার্ট ডাল উল্লেখ করেন যে, রাষ্ট্র চরম ক্ষমতার উৎস এবং ব্যক্তি রাষ্ট্রের সাহায্যে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। বল প্রয়োগকে তিনি ক্ষমতার এক বিশিষ্ট অঙ্গ বলে বর্ণনা করেছেন।
অ্যালান বল উল্লেখ করেন যে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ও নেতিবাচক অনুমোদনের মিলনে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ হয়ে থাকে। যেমন কোন রাজনৈতিক নেতা সম্পদ ও সম্মানের প্রলোভনে সাধারণ মানুষকে তাঁর মতের সপক্ষে নিয়ে আসতে পারেন। অপরদিকে তার স্বার্থেই বিরোধী ভিন্ন মতাবলম্বীদের অত্যাচার বা শাস্তির ভয় দেখাতে পারেন। আমরা প্রথম পন্থাটিকে ইতিবাচক এবং দ্বিতীয় পন্থাটিকে নেতিবাচক বলতে পারি।
একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ও যোগ্যতার উপর ক্ষমতার প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন অনেকাংশে নির্ভরশীল। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে তিনি এক বিশেষ সম্পর্ক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে এই সম্পর্ক সব সময় স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায় না। তুলনামূলক বিচারে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা, অন্যকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতার চেয়ে কম বা বেশি হতে পারে। যেমন বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী দ্বিতীয় কক্ষ। আইন প্রণয়ন এবং অর্থসংক্রান্ত ব্যাপারে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের আইনসভার দ্বিতীয় কক্ষের তুলনায় অনেক বেশি।
রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মূল ভিত্তি। সার্বভৌমত্বকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্র ক্ষমতাবান ও শক্তিশালী হয়ে উঠে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ করা হয়। মর্গানথু, হ্যারল্ড ল্যাসওয়েল, জর্জ ক্যাটলিন, চার্লস মেরিয়াম প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ এভাবে ক্ষমতার ব্যাখ্যা করেছেন।